ভূমিকা
তাপ বিকিরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে বিভিন্ন বস্তু তাপকে রশ্মি আকারে পরিবহন করে। এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে বোঝার জন্য আমরা আদর্শ কৃষ্ণ বস্তু ও কৃষ্ণ বস্তুর বিকিরণ, বিকিরণ ক্ষমতা ও শোষণ ক্ষমতা, এবং স্টেফান-বোল্ডম্যান সূত্রের আলোচনা করবো।
তাপ বিকিরণ (HEAT RADIATION)
তাপ (Heat)
তাপ এক প্রকার শক্তি যা উষ্ণতা বা শীতলতার অনুভূতি সৃষ্টি করে। তাপ সর্বদা উষ্ণ স্থান থেকে শীতল স্থানে প্রবাহিত হয়, যা তাপ সঞ্চালন নামে পরিচিত। তাপ সঞ্চালনের তিনটি প্রধান পদ্ধতি রয়েছে:
- পরিবহণ (Conduction)
- পরিচলন (Convection)
- বিকিরণ (Radiation)
যে প্রক্রিয়ায় তাপ কোন পদার্থের উষ্ণ স্থান থেকে শীতল স্থানে সঞ্চালিত হয়, কিন্তু পদার্থের উত্তপ্ত কণাগুলোর স্থান পরিবর্তন হয় না, তাকে তাপের পরিবহণ বলে। এটি সাধারণত কঠিন পদার্থে ঘটে। যে প্রক্রিয়ায় তাপ উত্তপ্ত কণাসমূহের স্থান পরিবর্তনের মাধ্যমে বস্তুর উষ্ণ স্থান থেকে শীতল স্থানে সঞ্চালিত হয়, তাকে তাপের পরিচলন বলে। এটি তরল ও বায়বীয় পদার্থে ঘটে। পরিচলন ও পরিবহণ পদ্ধতিতে তাপ সঞ্চালনের জন্য মাধ্যমের প্রয়োজন হয়, কিন্তু বিকিরণ প্রক্রিয়ায় তাপ সঞ্চালনে কোন মাধ্যমের প্রয়োজন হয় না। এই অধ্যায়ে আমরা বিকিরণ ও তার বৈশিষ্ট্য, কৃষ্ণবস্তু, বিকিরণের বিভিন্ন সূত্র, আপেক্ষিক তাপ নির্ণয়, সবুজ ঘর ইত্যাদি আলোচনা করব।
তাপ বিকিরণ (Heat Radiation)
আগুনের পাশে দাঁড়ালে বা উত্তপ্ত বস্তুর নিচে হাত রাখলে গরম অনুভূত হয়। এই ক্ষেত্রে পরিচলন প্রক্রিয়ায় তাপ সঞ্চালিত হয় না, কারণ উত্তপ্ত বায়ু উপরে উঠে যায়, নিচে নামে না। অথচ আমরা গরম অনুভব করি। সুতরাং এখানে তাপ বিকিরণ প্রক্রিয়ায় সঞ্চালিত হচ্ছে। বিকিরণের নিম্নলিখিত সংজ্ঞা দেওয়া যেতে পারে:
সংজ্ঞা:
যে প্রক্রিয়ায় তাপ কোন জড় পদার্থের সাহায্য ছাড়াই উষ্ণ স্থান থেকে শীতল স্থানে সঞ্চালিত হয়, তাকে বিকিরণ বলে। এই প্রক্রিয়ায় জড় মাধ্যম থাকলেও তাপ ঐ মাধ্যমের তাপমাত্রায় কোন পরিবর্তন ঘটায় না। বিকিরণ পদ্ধতিতে যে তাপ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সঞ্চালিত হয়, তাকে বিকীর্ণ তাপ বলে।
নিশ্চিতভাবে, আমি আপনার প্রদত্ত তথ্যকে আনুষ্ঠানিক ভাষায় পুনর্লিখন করছি:
সূর্য পৃথিবী থেকে \(1.5 \times 10^{8}\) কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই বিশাল ব্যবধানের অধিকাংশ স্থানই শূন্য, অর্থাৎ জড় মাধ্যমের কোন অস্তিত্ব নেই। তবুও, সূর্য থেকে সৌর শক্তি পৃথিবীতে পৌঁছাতে মাত্র সোয়া আট মিনিট সময় লাগে। এটি বিকিরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্ভব হয়। বিকীর্ণ তাপ শক্তি ও আলোক শক্তির মধ্যে সাদৃশ্য রয়েছে, এবং এই কারণেই সূর্য থেকে তাপ ও আলোক একই সঙ্গে পৃথিবীতে পৌঁছায়। এই বিকীর্ণ শক্তির গতি \(3 \times 10^{8}\) মিটার/সেকেন্ড বা \(186000\) মাইল/সেকেন্ড। এটি বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ (electro-magnetic wave)। মহাবিশ্বে বিভিন্ন প্রকারের ও প্রকৃতির বিকীর্ণ শক্তি বিদ্যমান। এর মধ্যে গামা রশ্মি (γ-রশ্মি), রঞ্জন রশ্মি (x-রশ্মি), অতিবেগুনি (Ultra-violet) রশ্মি, মহাজাগতিক রশ্মি (Cosmic ray) সবই বিকীর্ণ শক্তির অন্তর্ভুক্ত এবং এরা সকলেই বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ।
এদের বৈশিষ্ট্যের পার্থক্য হল তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের।
বিকীর্ণ তাপ শক্তির বৈশিষ্ট্যসমূহ:
- বিকীর্ণ তাপ শক্তি শূন্য স্থানের মধ্য দিয়ে চলাচল করতে সক্ষম।
- এটি আলোকের বেগে গমন করে।
- এটি কোন মাধ্যমের মধ্য দিয়ে গমন করলে মাধ্যমের তাপমাত্রার পরিবর্তন ঘটায় না, তবে কোন মাধ্যম বিকীর্ণ শক্তি শোষণ করলে তার তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
- বিকীর্ণ তাপ শক্তি বিপরীত বর্গীয় সূত্র মেনে চলে।
- আলোকের ন্যায় এটি প্রতিফলন ও প্রতিসরণের সূত্র মেনে চলে।
- এটি আলোকের ন্যায় ব্যতিচার, অপবর্তন ও সমবর্তন প্রভৃতি ঘটনা প্রদর্শন করে।
- বিকীর্ণ তাপ শক্তির পরিমাণ পারিপার্শ্বিক বস্তুর উপস্থিতি দ্বারা প্রভাবিত হয় না।
- সূর্য গ্রহণের সময় বিকীর্ণ তাপ শক্তি পৃথিবীতে পৌঁছতে পারে না। এ কারণে সূর্য গ্রহণের সময় পৃথিবীর তাপমাত্রা হ্রাস পায়।
আদর্শ কৃষ্ণ বস্তু ও কৃষ্ণ বস্তুর বিকিরণ
আমরা জানি, বিকীর্ণ শক্তি যে কোন বস্তুর উপর আপতিত হলে তার কিছু অংশ বস্তু কর্তৃক প্রতিফলিত, কিছু অংশ শোষিত এবং অবশিষ্ট অংশ অপসৃত বা সংবাহিত হয়। যদি মোট আপতিত বিকীর্ণ শক্তির প্রতিফলিত (reflected) অংশকে \('r'\) দ্বারা, শোষিত (absorbed) অংশকে \('a'\) দ্বারা এবং অপসৃত (transmitted) অংশকে \('t'\) দ্বারা সূচিত করা হয়, তবে শক্তির নিত্যতা সূত্র হতে মোট বিকীর্ণ শক্তির ক্ষেত্রে আমরা লিখতে পারি \(r+a+t=1\)। যদি \(r = 0\) এবং \(t = 0\) হয়, তবে \(a = 1\) অর্থাৎ আপতিত বিকীর্ণ শক্তির মোট অংশই বস্তু কর্তৃক শোষিত হয়েছে। অতএব আদর্শ কৃষ্ণ বস্তুর সংজ্ঞা হল নিম্নরূপ:
সংজ্ঞা:
যে বস্তুর উপর আপতিত মোট বিকীর্ণ তাপ শক্তির সব অংশই বস্তু কর্তৃক শোষিত হয়, কোন অংশই প্রতিফলিত, অপসৃত বা সংবাহিত হয় না তাকে আদর্শ কৃষ্ণ বস্তু বলে।
আবার তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলোকে বলা যায়- যে বস্তু সকল তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের বিকীর্ণ তাপ শক্তি শোষণ করে তাকে আদর্শ কৃষ্ণ বস্তু বলে। যেহেতু আদর্শ কৃষ্ণ বস্তু সব তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের বিকীর্ণ তাপ শক্তিকে শোষণ করে সেহেতু তাকে উত্তপ্ত করলে তা সকল তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের তাপ শক্তিকে বিকিরণ করে। আলোকের মধ্যে রাখলে একে কালো দেখায়। কৃষ্ণ বস্তুর বিকিরণ ক্ষমতাকে \(E\), দ্বারা সূচিত করা হয়।
কোন একটি আদর্শ কৃষ্ণ বস্তুকে উত্তপ্ত করলে তা হতে সকল তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের বিকিরণ নিঃসৃত হয়। একে কৃষ্ণ বস্তুর বিকিরণ বলে। এই নিঃসৃত বিকিরণ শক্তির প্রকৃতি কৃষ্ণ বস্তুর কোন বিশেষ ধর্মের উপর নির্ভর করে না। কেবল এবং কেবলমাত্র কৃষ্ণ বস্তুর তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে। কিন্তু বাস্তবে কোন বস্তুই সব তাপমাত্রায় সকল তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের সমস্ত আপতিত বিকীরণ শক্তিকে সম্পূর্ণরূপে শোষণ করতে পারে না। সুতরাং আদর্শ কৃষ্ণ বস্তুর বিকিরণ স্থির তাপমাত্রায় উত্তপ্ত কোন বেষ্টনীর অভ্যন্তরস্থ বিকিরণের সদৃশ। এই কারণে স্থির তাপমাত্রায় উত্তপ্ত কোন বেষ্টনীর অভ্যন্তরস্থ বিকিরণকে কৃষ্ণ বস্তুর বিকিরণ বলা হয়।
যে কোন তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের ক্ষেত্রে কৃষ্ণ বস্তুর শোষণ করার ক্ষমতা যেমন সর্বাধিক তেমনি কোন নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় এবং যে কোন তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের ক্ষেত্রে তার বিকিরণ নিঃসরণ করার ক্ষমতাও সর্বাধিক। কাজেই কৃষ্ণ বস্তু কর্তৃক বিকিরণ বা স্থির তাপমাত্রায় উত্তপ্ত বেষ্টনীর অভ্যন্তরস্থ বিকিরণকে অনেক সময় পূর্ণ বিকিরণও (full or total radiation) বলা হয়।
কৃষ্ণ বস্তুর প্রকারভেদ
গঠন অনুসারে কৃষ্ণ বস্তু দুই প্রকারের; যথা-
- ফেরীর কৃষ্ণ বস্তু (Ferry's black body)
- ভীন-এর কৃষ্ণ বস্তু (Wien's black body)
মূলনীতির দিক থেকে উভয়ই একই হলেও কর্ম দক্ষতার দিক থেকে ভীন-এর কৃষ্ণ বস্তু উন্নততর। আধুনিক কালে এর ব্যবহার অধিক। এখানে ফেরীর কৃষ্ণ বস্তু আলোচনা করা হলো।
ফেরীর কৃষ্ণ বস্তু (Ferry's black body)
ফেরীর কৃষ্ণ বস্তুর বর্ণনা নিম্নে প্রদান করা হলো। এটি দুই দেয়ালবিশিষ্ট একটি ফাঁপা গোলক। গোলকটির ভিতরের দেয়ালে ভূষা কালির প্রলেপ থাকে এবং বাইরের দেয়ালটি নিকেল পালিশ করা থাকে। দুই দেয়ালের মধ্যবর্তী স্থান বায়ুশূন্য থাকে, ফলে পরিবহণ ও পরিচলন পদ্ধতিতে তাপ নষ্ট হতে পারে না। গোলকের একদিকে একটি সরু ছিদ্র থাকে \((O)\) , যা ছিদ্র পথে বিকিরণ সরাসরি গোলকের ভেতরে প্রবেশ করে। এই বিকিরণ ভেতরের দেয়ালে বারবার প্রতিফলিত হয়ে অবশেষে শোষিত হয় \((P)\)। গোলকটিকে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে ছিদ্র দিয়ে বিকিরণ নির্গত হয়, যা কৃষ্ণ বস্তুর বিকিরণ নামে পরিচিত। উল্লেখ্য, কেবল ছিদ্র আদর্শ কৃষ্ণ বস্তুর ন্যায় আচরণ করে, গোলকের দেয়াল নয়।
বিকিরণ ক্ষমতা ও শোষণ ক্ষমতা
কোন বস্তুকে উত্তপ্ত করা হলে, উক্ত বস্তু হতে তাপ বিকিরিত হয়। এই বিকিরিত তাপের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। বিকিরিত তাপের প্রকৃতি নির্ভর করে বস্তুটির ভৌত অবস্থার উপর। বিভিন্ন পরীক্ষালব্ধ ফলাফল থেকে জানা গেছে যে, বিকিরিত তাপের পরিমাণ পাঁচটি শর্তের উপর নির্ভর করে, যথা:
- উত্তপ্ত বস্তুর তাপমাত্রা,
- পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রা,
- তরঙ্গ দৈর্ঘ্য,
- বিকিরণ তলের প্রকৃতি ও ক্ষেত্রফল এবং
- সময়।
বিকিরণ ক্ষমতা
নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কোন বিকিরক বস্তুর একক ক্ষেত্রফল একক সময়ে যে পরিমাণ তাপ বিকিরণ করে এবং একই তাপমাত্রায় ও একই সময়ে একক ক্ষেত্রফলবিশিষ্ট আদর্শ কৃষ্ণ বস্তু যে পরিমাণ তাপ বিকিরণ করে, তাদের অনুপাতকে বিকিরণ ক্ষমতা বলে। একে \(E_{\lambda}\) দ্বারা সূচিত করা হয়।
ব্যাখ্যা: নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কোন বিকিরক একক সময়ের একক ক্ষেত্রফল হতে \(\delta H_{1}\) পরিমাণ তাপ বিকিরণ করে এবং ঐ তাপমাত্রায় একটি আদর্শ কৃষ্ণ বস্তু একক সময়ে একক ক্ষেত্রফল হতে \(\delta H_{2}\) পরিমাণ তাপ বিকিরণ করে।
অতএব বিকিরণ ক্ষমতা: $$E_{\lambda} = \frac{\delta H_{1}}{\delta H_{2}}$$
শোষণ ক্ষমতা
কোন নির্দিষ্ট সময়ে কোন বস্তু বিকিরিত তাপের যে পরিমাণ শোষণ করে এবং ঐ সময়ে বস্তুর উপর যে পরিমাণ বিকিরিত তাপ আপতিত হয়, তাদের অনুপাতকে শোষণ ক্ষমতা বলে। একে \(a_{\lambda}\) দ্বারা সূচিত করা হয়।
ব্যাখ্যা: নির্দিষ্ট সময়ে কোন বস্তু বিকিরিত তাপের \(\delta H_{1}\) অংশ শোষণ করে এবং ঐ সময়ে বস্তুর উপর মোট \(\delta H_{2}\) পরিমাণ বিকিরিত তাপ আপতিত হয়।
অতএব শোষণ ক্ষমতা: $$a_{\lambda} = \frac{\delta H_{1}}{\delta H_{2}}$$
স্টেফান-বোলজম্যান সূত্রটি
স্টেফান-বোলজম্যান সূত্রটি তাপগতিবিদ্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র, যা একটি কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণ শক্তি এবং তার তাপমাত্রার মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে। এটি বলে যে, একটি কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণ শক্তি তার তাপমাত্রার চতুর্থ ঘাতের সমানুপাতিক। সূত্রটি গাণিতিকভাবে প্রকাশ করা হয়:
$$ E = \sigma T^4 $$ এখানে, \( E \) হল বিকিরণ শক্তি প্রতি একক ক্ষেত্রফল
(W/m²),
\( \sigma \) হল স্টেফান-বোলজম্যান ধ্রুবক (\( 5.67 \times 10^{-8} \, W \,
m^{-2} \, K^{-4} \)),
\( T \) হল বস্তুর তাপমাত্রা (কেলভিনে)।
এখন, আমরা এই সূত্রটি গাণিতিকভাবে প্রমাণ করব।
প্রমাণ:
1. প্ল্যাঙ্কের বিকিরণ সূত্র:
প্ল্যাঙ্কের বিকিরণ সূত্র অনুযায়ী, একটি কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণ শক্তি প্রতি একক তরঙ্গদৈর্ঘ্য প্রতি একক ক্ষেত্রফল প্রতি একক সময়ে হয়:
$$ E(\lambda, T) = \frac{2hc^2}{\lambda^5} \frac{1}{e^{\frac{hc}{\lambda
kT}} - 1} $$ এখানে, \( h \) হল প্ল্যাঙ্ক ধ্রুবক,
\( c \) হল আলোর বেগ,
\( \lambda \) হল তরঙ্গদৈর্ঘ্য,
\( k \) হল বোল্টজম্যান ধ্রুবক।
2. সম্পূর্ণ বিকিরণ শক্তি:
সম্পূর্ণ বিকিরণ শক্তি পেতে, আমাদের এই শক্তিকে সমস্ত তরঙ্গদৈর্ঘ্য জুড়ে ইন্টিগ্রেট করতে হবে:
$$ E(T) = \int_0^\infty E(\lambda, T) \, d\lambda $$
3. ইন্টিগ্রেশন:
এই ইন্টিগ্রেশনটি সম্পন্ন করার জন্য, আমরা কিছু জটিল গণিত ব্যবহার করি যা এখানে বিস্তারিতভাবে দেখানো সম্ভব নয়। তবে, ইন্টিগ্রেশন শেষে আমরা পাই:
$$ E(T) = \sigma T^4 $$ যেখানে \( \sigma \) হল স্টেফান-বোলজম্যান ধ্রুবক, যার মান হল: $$ \sigma = \frac{2\pi^5 k^4}{15h^3c^2} $$
এইভাবে, আমরা স্টেফান-বোলজম্যান সূত্রটি গাণিতিকভাবে প্রমাণ করতে পারি। এটি তাপগতিবিদ্যার একটি মৌলিক সূত্র যা তাপ বিকিরণ এবং তাপমাত্রার মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে।
উপসংহার
তাপ বিকিরণ এবং আদর্শ কৃষ্ণ বস্তুর বিকিরণ ধারণাগুলি আমাদের পরিবেশ এবং দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। স্টেফান-বোল্ডম্যান সূত্র এবং শোষণ-বিকিরণ ক্ষমতার জ্ঞান তাপ বিকিরণ সম্পর্কিত বিভিন্ন গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।