এই পোস্টে আমি মুক্তিবেগ, কৃত্রিম উপগ্রহের বেগ এবং উচ্চতা সম্পর্কে গভীর বিশ্লেষণ গাণিতিক সূত্র প্রদান করবো। মহাকাশ বিজ্ঞানের মৌলিক ধারণাগুলির উপর আলোকপাত করবো এবং কৃত্রিম উপগ্রহের প্রক্ষেপণ ও কক্ষপথে স্থাপনের প্রক্রিয়াগুলি ব্যাখ্যা করবো
মুক্তিবেগের সংজ্ঞা
মুক্তিবেগ হলো এমন একটি বেগ, যে বেগে কোনো বস্তু কোনো মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র থেকে ছুড়ে দিলে তা আর ফিরে আসে না।
মুক্তিবেগের সমীকরণ
কোনো গ্রহের ভর \(M\), ব্যাসার্ধ \(R\) এবং অভিকর্ষজ ত্বরণ হলে \(g\),
পৃথিবীতে কোনো বস্তুর মুক্তিবেগের মান
মুক্তিবেগের সমীকরণ হলোঃ
\( V_{e} = \sqrt{2gR}\)
অভিকর্ষজ ত্বরণ, \(g = 9.8 ms^{-2}\)
পৃথিবীর ব্যাসার্ধ, \(R = 6.4 \times 10^{6} m\)
মুক্তিবেগ, \(V_{e}\) = ?
\(= 11200 ms^{-1} = 11.2 kms^{-1}\)
কৃত্রিম উপগ্রহ
মানুষ কর্তৃক প্রেরিত যে সকল মহাশূন্যযান পৃথিবী থেকে নির্দিষ্ট উচ্চতায় নির্দিষ্ট কক্ষপথে থেকে পৃথিবীকে পরিভ্রমণ করে, তাদেরকে কৃত্রিম উপগ্রহ বলে।
হিসেব করে দেখা গেছে যে, কোনো মহাশূন্যযানকে \(930 km\) উপরে ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে প্রায় \(8.05 kms^{-1}\) থেকে \(11.1 kms^{-1}\) বেগ দিতে পারলে এটা পৃথিবীর চারদিকে কৃত্রিম চাঁদের মতো ঘুরতে থাকবে। পৃথিবীকে পরিভ্রমণ করার জন্য যে কেন্দ্রমুখী বলের প্রয়োজন হয়, উপগ্রহের ওপর পৃথিবীর অভিকর্ষ বলই তা যোগান দেয়। কোনো কৃত্রিম উপগ্রহকে তার নিজস্ব স্থায়ী কক্ষপথে স্থাপনের পূর্বে সাময়িকভাবে যে অস্থায়ী কক্ষপথে স্থাপন করা হয় তাকে পার্কিং কক্ষপথ বলে।
১৯৫৭ সালের ৪ অক্টোবর রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা স্পুটনিক-1 নামে প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ মহাশূন্যে প্রেরণ করেন। প্রথম মহাশূন্যচারী সোভিয়েত ইউনিয়নের (রাশিয়ার) ইউরি গ্যাগারিন ১৯৬১ সালের ১২ এপ্রিল ভস্টক-1 নামক কৃত্রিম উপগ্রহে চড়ে পৃথিবীকে পরিভ্রমণ করে নিরাপদে ফিরে আসেন। তিন স্তরের রকেটের সাহায্যে কৃত্রিম উপগ্রহকে নির্দিষ্ট উচ্চতায় তুলে ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে নির্দিষ্ট বেগে ছেড়ে দেয়া হয়। ফলে উপগ্রহটি পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে থাকে।
কৃত্রিম উপগ্রহের বেগ, আবর্তনকাল ও ভূপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা
ধরা যাক, \(m\) ভরবিশিষ্ট একটি কৃত্রিম উপগ্রহ পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে \(h\) উচ্চতায় \(v\) বেগে পরিভ্রমণ করছে।
পৃথিবী এবং কৃত্রিম উপগ্রহের আকর্ষণ বল,
এখানে, \(r=R+h\) হচ্ছে পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে উপগ্রহের দূরত্ব এবং \(M\) পৃথিবীর ভর।