তেজস্ক্রিয়তা: এক অদ্ভুত প্রাকৃতিক ঘটনা

তেজস্ক্রিয়তা কী, এর আবিষ্কার, বৈশিষ্ট্য এবং আলফা, বিটা, গামা রশ্মির ধর্ম সম্পর্কে জানুন। তেজস্ক্রিয়তার ব্যবহার, অর্ধায়ু ও পরিবেশগত বিপদ সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য।


তেজস্ক্রিয়তা \((Radioactivity)\)

তেজস্ক্রিয়তা (\(Radioactivity\)) হলো পদার্থবিজ্ঞানের এক অদ্ভুত ও গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক ঘটনা, যা মানব সমাজ ও বিজ্ঞানে যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। এই স্বতঃস্ফূর্ত বিকিরণ প্রক্রিয়া শুধু পারমাণবিক কাঠামোর গভীর রহস্য উন্মোচন করেনি, বরং চিকিৎসা থেকে শিল্পক্ষেত্র পর্যন্ত এর ব্যাপক প্রয়োগ আমাদের জীবনযাত্রাকে বহুলাংশে প্রভাবিত করেছে।


তেজস্ক্রিয়তার আবিষ্কার ও পরিচিতি

এক্স-রে (\(X-ray\)) আবিষ্কারের মাত্র তিন বছর পরে, ১৮৯৬ সালে ফরাসী বিজ্ঞানী হেনরি বেকেরেল (\(Henry \ Becquerel, \ 1852–1908\)) ইউরেনিয়াম লবণের উপর গবেষণা করার সময় তেজস্ক্রিয়তার ঘটনাটি আবিষ্কার করেন। তিনি দেখতে পান যে, ইউরেনিয়ামের লবণের নমুনা যদি ফটোগ্রাফিক প্লেটে প্রলেপযুক্ত কাগজের ভিতরেও রাখা হয়, তবুও প্লেটে বিশেষ দাগ সৃষ্টি হয়। তাঁর নামানুসারে এই রশ্মিগুলিকে বেকেরেল রশ্মি নামে অভিহিত করা হয়।

বেকেরেল লক্ষ্য করেন, এই রশ্মি নির্গমনের জন্য বাইরে থেকে কোনো নতুন শক্তি প্রয়োগ বা কোনো প্রকার প্রভাবের প্রয়োজন হয় না; এটি একটি স্বতঃস্ফূর্ত, নিরবচ্ছিন্ন এবং প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। পরবর্তীতে মাদাম কুরি ও পিয়ের কুরি এই রশ্মিকে তেজস্ক্রিয় রশ্মি এবং নির্গমনের ঘটনাকে তেজস্ক্রিয়তা (\(Radioactivity\)) নামে আখ্যা দেন।

প্রকৃতিতে সাধারণত যেসব মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা \(৮২\)-এর বেশি, তাদের অধিকাংশই তেজস্ক্রিয়। এই মৌলগুলি থেকে আলফা (\(\alpha\)), বিটা (\(\beta\)) ও গামা (\(\gamma\)) নামে তিন প্রকারের শক্তিশালী রশ্মি নির্গত হতে থাকে।

তেজস্ক্রিয়তার সংজ্ঞা

তেজস্ক্রিয় মৌলিক কণাদের নিউক্লিয়াস থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অ্যালফা, বিটা ও গামা রশ্মি নির্গমনের প্রক্রিয়াকে তেজস্ক্রিয়তা বলে।


তেজস্ক্রিয় রশ্মির প্রকৃতি (Nature of Radioactive Rays)

তেজস্ক্রিয় রশ্মিগুলির প্রকৃতি বোঝার জন্য এদের চৌম্বক বা বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের মধ্যে দিয়ে প্রবাহ লক্ষ্য করা হয়। তেজস্ক্রিয় পদার্থ থেকে নির্গত রশ্মিগুলি চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় তিন ভাগে বিভক্ত হয়:

  • বিটা (\(\beta\)) রশ্মি: এটি ঋণাত্মক আধানযুক্ত হওয়ায় ঋণাত্মক মেরুর দিকে বেঁকে যায় এবং ভর কম হওয়ায় সবচেয়ে বেশি বেঁকে যায়।
  • আলফা (\(\alpha\)) রশ্মি: এটি ধনাত্মক আধানযুক্ত হওয়ায় ধনাত্মক মেরুর দিকে বেঁকে যায় এবং ভর বেশি হওয়ায় সবচেয়ে কম বেঁকে যায়।
  • গামা (\(\gamma\)) রশ্মি: এটি আধানবিহীন হওয়ায় কোনো দিকে বেঁকে না গিয়ে সোজা পথে চলে যায়।

তেজস্ক্রিয়তার বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Radioactivity)

  1. যে সমস্ত মৌলিক পদার্থের পারমাণবিক সংখ্যা \(৮২\)-এর বেশি, তারা সাধারণত তেজস্ক্রিয় হয়।
  2. তেজস্ক্রিয় পদার্থ স্বাভাবিক অবস্থায় আলফা, বিটা ও গামা এই তিন প্রকারের তেজস্ক্রিয় রশ্মি নির্গমন করে।
  3. তেজস্ক্রিয়তার সঙ্গে নিউক্লিয়াসের ভর হ্রাস পায় এবং শক্তি মুক্ত হয়।
  4. তেজস্ক্রিয়তা একটি প্রাকৃতিক, স্বতঃস্ফূর্ত ও অবিরত ঘটনা। তাপ, চাপ, বিদ্যুৎ বা চৌম্বক ক্ষেত্রের কোনো প্রভাব দ্বারা এর মাত্রা বাড়ানো বা কমানো যায় না।

আলফা \(\alpha\), বিটা \(\beta\) ও গামা \(\gamma\) রশ্মি হলো তেজস্ক্রিয় (radioactive) পদার্থ থেকে নির্গত তিনটি প্রধান ধরনের বিকিরণ। এদের প্রধান ধর্ম বা বৈশিষ্ট্যগুলো নিচে আলোচনা করা হলো:

আলফা \(\alpha\) রশ্মির ধর্ম

  • প্রকৃতি (Nature): আলফা রশ্মি হলো ধনাত্মক আধানযুক্ত কণা। এটি মূলত একটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াস \(^4_2\text{He}\), যেখানে দুটি প্রোটন ও দুটি নিউট্রন থাকে।
  • আধান (Charge): এর আধান হলো \(+2e\) (ধনাত্মক)।
  • ভর (Mass): এটির ভর তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি (ইলেকট্রনের ভরের প্রায় ৭৩০০ গুণ)।
  • বিচ্যুতি (Deflection): এটি তড়িৎক্ষেত্র (electric field) এবং চৌম্বকক্ষেত্র (magnetic field) দ্বারা বিচ্যুত হয়।
  • ভেদন ক্ষমতা (Penetrating Power): এর ভেদন ক্ষমতা সবচেয়ে কম। একটি কাগজের শীট বা বায়ুস্তরের কয়েক সেন্টিমিটার (প্রায় ১০ সেমি) দূরত্ব অতিক্রম করার পরেই এটি আটকে যায়।
  • আয়নন ক্ষমতা (Ionizing Power): এর আয়নন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি। এটি যে মাধ্যমের মধ্যে দিয়ে যায়, সেই মাধ্যমের অণু বা পরমাণু থেকে ইলেকট্রন বের করে সেগুলিকে সহজে আয়নিত করতে পারে।

বিটা \(\beta\) রশ্মির ধর্ম

  • প্রকৃতি (Nature): বিটা রশ্মি হলো উচ্চ-শক্তির ইলেকট্রন \(\beta^-\) বা পজিট্রন \(\beta^+\) কণা। \(\beta^-\) কণা ঋণাত্মক আধানযুক্ত।
  • আধান (Charge): \(\beta^-\) কণার আধান হলো \(-e\) (ঋণাত্মক)।
  • ভর (Mass): এর ভর ইলেকট্রনের ভরের সমান, যা আলফা কণার তুলনায় খুব কম।
  • বিচ্যুতি (Deflection): এটি তড়িৎক্ষেত্র ও চৌম্বকক্ষেত্র দ্বারা বিচ্যুত হয়, তবে আলফা কণার বিপরীত দিকে। এর ভর কম হওয়ার কারণে এর বিচ্যুতি আলফা কণার চেয়ে বেশি হয়।
  • ভেদন ক্ষমতা (Penetrating Power): এর ভেদন ক্ষমতা আলফা রশ্মির তুলনায় অনেক বেশি (প্রায় ১০০ গুণ)। এটি কিছু মিলিমিটার পুরু অ্যালুমিনিয়াম পাত পর্যন্ত ভেদ করতে পারে।
  • আয়নন ক্ষমতা (Ionizing Power): এর আয়নন ক্ষমতা আলফা রশ্মির তুলনায় কম (প্রায় \(1/100\))।

গামা \(\gamma\) রশ্মির ধর্ম

  • প্রকৃতি (Nature): গামা রশ্মি হলো তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণ (Electromagnetic radiation)। এগুলি উচ্চ শক্তি সম্পন্ন ফোটন কণা।
  • আধান (Charge): এর কোনো আধান নেই। এটি আধান নিরপেক্ষ (neutral)।
  • ভর (Mass): এর কোনো ভর নেই।
  • বিচ্যুতি (Deflection): এর আধান না থাকায় এটি তড়িৎক্ষেত্র বা চৌম্বকক্ষেত্র দ্বারা বিচ্যুত হয় না।
  • ভেদন ক্ষমতা (Penetrating Power): এর ভেদন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি। এটি বেশ পুরু সীসা বা কংক্রিটের দেওয়াল ভেদ করতে পারে।
  • আয়নন ক্ষমতা (Ionizing Power): এর আয়নন ক্ষমতা সবচেয়ে কম।

এই তিনটি রশ্মির ভেদন ক্ষমতা (Penetrating Power) এবং আয়নন ক্ষমতা (Ionizing Power) এর ক্রমটি নিম্নরূপ:

  • ভেদন ক্ষমতা: \(\alpha\) রশ্মি < \(\beta\) রশ্মি < \(\gamma\) রশ্মি
  • আয়নন ক্ষমতা: \(\alpha\) রশ্মি > \(\beta\) রশ্মি > \(\gamma\) রশ্মি

তেজস্ক্রিয় মৌলের অর্ধায়ু (Half-life)

যে সময়কালে কোনো তেজস্ক্রিয় পদার্থের মোট পরিমাণের ঠিক অর্ধেক পরিমাণ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে যায়, সেই সময়কালকে পদার্থটির অর্ধায়ু বলে।

তেজস্ক্রিয়তার একক (Unit of Radioactivity)

তেজস্ক্রিয়তা পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত আন্তর্জাতিক একক হলো বেকেরেল (\(Becquerel, \ Bq\))। প্রতি সেকেন্ডে একটি তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ঘটলে তেজস্ক্রিয়তার একককে এক বেকেরেল বলা হয়।


তেজস্ক্রিয়তার ব্যবহার (Uses of Radioactivity)

তেজস্ক্রিয়তার বহুমুখী ব্যবহারগুলি নিম্নরূপ:

  • চিকিৎসা বিজ্ঞান: দুরারোগ্য ক্যান্সার রোগ নিরাময়ের কাজে ব্যবহার।
  • রোগ নির্ণয়: রোগ নির্ণয়ের কাজে তেজস্ক্রিয় প্রদর্শক (\(Radioactive \ tracer\)) হিসেবে ব্যবহার।
  • কৃষি ক্ষেত্র: উন্নত বীজ তৈরি এবং গবেষণায় ব্যবহার।
  • শিল্প ও খনিজ: বিভিন্ন ধাতুর পরিমাণ নির্ণয়ে ব্যবহার।
  • দৈনন্দিন জীবন: ঘড়ির কাঁটা ও নম্বরে অন্ধকারে উজ্জ্বলতা সৃষ্টিতে ব্যবহার।

তেজস্ক্রিয়তার বিপদ (Danger of Radioactivity)

তেজস্ক্রিয়তা থেকে বিপুল বিপদের আশঙ্কাও রয়েছে। উচ্চ মাত্রার তেজস্ক্রিয় বিকিরণ জীবদেহে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে:

  • উচ্চ মাত্রার বিকিরণ মানবদেহে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে।
  • দীর্ঘমেয়াদী সংস্পর্শে থাকলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, মানসিক বিকার বা বিকলাঙ্গতা সৃষ্টি হতে পারে।
  • তেজস্ক্রিয় বর্জ্য (\(Radioactive \ waste\)) পদার্থের পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ার সমস্যা অত্যন্ত ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের ঝুঁকি তৈরি করেছে।

তেজস্ক্রিয়তা (Radioactivity) | সচরাচর জিজ্ঞাস্য প্রশ্নাবলী (FQA)


১. তেজস্ক্রিয়তা কী?

তেজস্ক্রিয়তা হলো কিছু মৌলিক পদার্থের নিউক্লিয়াস থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আলফা (\( \alpha\) ), বিটা (\( \beta \)) ও গামা (\( \gamma \)) রশ্মি নির্গমনের একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া।

২. তেজস্ক্রিয়তা কে আবিষ্কার করেন?

ফরাসি বিজ্ঞানী হেনরি বেকেরেল (\( Henry \ Becquerel \)) \( ১৮৯৬\) সালে তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কার করেন।

৩. কোন বিজ্ঞানী তেজস্ক্রিয়তাকে 'Radioactivity' নাম দেন?

বিজ্ঞানী মাদাম কুরি (\( Marie \ Curie \)) এবং পিয়ের কুরি (\( Pierre \ Curie \)) এই ঘটনাকে 'Radioactivity' নামে আখ্যা দেন।

৪. প্রকৃতিতে সাধারণত কোন মৌলগুলি তেজস্ক্রিয় হয়?

প্রকৃতিতে সাধারণত যেসব মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা \(82\)-এর বেশি, তাদের অধিকাংশই তেজস্ক্রিয় হয়।

৫. তেজস্ক্রিয় রশ্মি কয় প্রকার ও কী কী?

তেজস্ক্রিয় রশ্মি প্রধানত তিন প্রকার:আলফা (\( \alpha \)) রশ্মি,বিটা (\( \beta\)) রশ্মি এবং গামা (\( \gamma\)) রশ্মি

৬. আলফা, বিটা এবং গামা রশ্মির মধ্যে কোনটি আধানবিহীন?

গামা (\( \gamma \)) রশ্মি আধানবিহীন (নিরপেক্ষ) তড়িৎ-চুম্বকীয় বিকিরণ।

৭. আলফা কণা (\( Alpha \ Particle \)) আসলে কীসের প্রবাহ?

আলফা কণা হলো মূলত হিলিয়াম নিউক্লিয়াসের প্রবাহ (\( \text{He}^{2+} \)), যা দুটি প্রোটন ও দুটি নিউট্রন নিয়ে গঠিত।

৮. বিটা কণা (\(Beta \ Particle\)) আসলে কীসের প্রবাহ?

বিটা কণা হলো উচ্চ গতিসম্পন্ন ইলেকট্রনের (\(\text{e}^-\)) প্রবাহ।

৯. আলফা, বিটা এবং গামা রশ্মির মধ্যে কার ভেদন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি?

গামা (\(\gamma\)) রশ্মির ভেদন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি। এটি কয়েক সেমি. পুরু সীসার পাতের মধ্যে দিয়েও যেতে পারে।

১০. তেজস্ক্রিয়তার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য কী?

তেজস্ক্রিয়তা একটি প্রাকৃতিক, স্বতঃস্ফূর্ত এবং অবিরত ঘটনা; তাপ, চাপ বা অন্য কোনো বাহ্যিক প্রভাব দ্বারা এর মাত্রা পরিবর্তন করা যায় না (\(N = N_0 e^{-\lambda t}\) সূত্র দ্বারা এটি নিয়ন্ত্রিত হয়)।

১১. তেজস্ক্রিয় মৌলের অর্ধায়ু (\(Half\text{-}life\)) বলতে কী বোঝায়?

যে নির্দিষ্ট সময়কালে কোনো তেজস্ক্রিয় পদার্থের মোট পরিমাণের ঠিক অর্ধেক অংশ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে যায়, তাকেই ঐ পদার্থের অর্ধায়ু (\(\text{T}_{\frac{1}{2}}\)) বলে।

১২. তেজস্ক্রিয়তা পরিমাপের আন্তর্জাতিক একক (\(SI \ Unit\)) কী?

তেজস্ক্রিয়তা পরিমাপের আন্তর্জাতিক একক হলো বেকেরেল (\(Becquerel, \ Bq\))। (\(1 \ \text{Bq} = 1\) ক্ষয়/সেকেন্ড)।

১৩. আলফা, বিটা এবং গামা রশ্মির মধ্যে কার আয়নন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি?

আলফা (\(\alpha\)) রশ্মির আয়নন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি।

১৪. তেজস্ক্রিয়তার একটি ব্যবহার লিখুন।

চিকিৎসা বিজ্ঞানে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ, যেমন - কোবাল্ট-\(60\) (\(\text{Co}-60\)) ব্যবহার করে ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা করা হয়।

১৫. তেজস্ক্রিয়তার কারণে জীবদেহে কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে?

উচ্চ মাত্রার তেজস্ক্রিয় বিকিরণ মানবদেহে মারাত্মক ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে, \(\text{DNA}\) ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

উপসংহার (Conclusion)

তেজস্ক্রিয়তা মানব ইতিহাসের এক যুগান্তকারী আবিষ্কার। এটি একদিকে যেমন চিকিৎসা বিজ্ঞান থেকে শুরু করে শিল্প ও গবেষণার বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের অভূতপূর্ব সাফল্য এনে দিয়েছে, অন্যদিকে তেমনি এর ভুল বা অসতর্ক ব্যবহার পারমাণবিক বর্জ্য এবং বিকিরণের মাধ্যমে জীবজগৎ ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করেছে। তেজস্ক্রিয়তা মানবজাতির জন্য আশীর্বাদ এবং অভিশাপ—উভয়ই হতে পারে। তাই, ভবিষ্যতের জন্য এই শক্তিশালী প্রাকৃতিক ঘটনাকে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ব্যবহার করা এবং এর ক্ষতিকর দিকগুলি মোকাবিলার জন্য নিরাপদ ও টেকসই পদ্ধতি উদ্ভাবন করা অত্যন্ত জরুরি।

মন্তব্যসমূহ