পীড়ন, বৃষ্টির ফোঁটার গোলাকার আকার, এবং কৃত্রিম উপগ্রহের গতি ও পর্যায়কাল বিশ্লেষণ
ভূমিকা: পদার্থবিজ্ঞানে বিভিন্ন প্রাকৃতিক ঘটনা ও পদার্থের বৈশিষ্ট্য নিয়ে গবেষণা করা হয়। এই প্রবন্ধে পীড়নের ধারণা, বৃষ্টির ফোঁটার গোলাকার আকৃতি ধারণের কারণ এবং কৃত্রিম উপগ্রহের গতি ও পর্যায়কাল নিয়ে বিশদ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। আমরা জানব কীভাবে পীড়ন পদার্থের প্রয়োগ ক্ষমতা নির্ধারণ করে, কেন বৃষ্টির ফোঁটাগুলি গোলাকার আকার ধারণ করে, এবং কীভাবে একটি উপগ্রহের গতি ও পর্যায়কাল নির্ধারিত হয়। এর মাধ্যমে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ এবং কেন্দ্রাতিগ শক্তি সম্পর্কেও একটি ধারণা তৈরি হবে।
বৃষ্টির ফোঁটা পতনের সময় গোলাকার আকার ধারণ করে কেন?
বিস্তারিত জানতে হলে সৃজনশীল প্রশ্ন ও সমাধান দেখুন।
নিচের চিত্রের আলোকে প্রশ্নগুলো সমাধান করুন:
    ভূপৃষ্ঠ থেকে গ্রহ এর উচ্চতা, \(h = 650 \, km \) 
    পৃথিবীর ব্যাসার্ধ, \(R = 6400 \, km \)
    পৃথিবীর ভর \(M= 5.98 × 1024 \, kg \)
    মহাকর্ষীয় ধ্রুবক = \(6.67 × 10^{-11} \, Nm²kg^{-2}\)
  
(ক) পীড়ন কাকে বলে?
(খ) বৃষ্টির ফোঁটা পতনের সময় গোলাকার আকার ধারণ করে কেন?
(গ) উদ্দীপকে কৃত্রিম উপগ্রহটির বেগ কত?
(ঘ) যদি উদ্দীপকের কৃত্রিম উপগ্রহটি পৃথিবীপৃষ্ঠ হতে \(700 \,km \) উপরে হতো তবে পর্যায়কালের কোনো পরিবর্তন ঘটত কি? প্রয়োজনীয় গাণিতিক বিশ্লেষণসহ যুক্তি দাও।
সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর
(ক) পীড়ন বলতে বোঝায় একটি বস্তুর উপর অন্য একটি বস্তুর মহাকর্ষীয় আকর্ষণ শক্তির প্রভাব। এটি মূলত মহাকর্ষীয় বলের কারণে সৃষ্ট একটি অবস্থা।
(খ) বৃষ্টির ফোঁটা পতনের সময় গোলাকার আকার ধারণ করে কারণ পৃষ্ঠটান (surface tension) জলের অণুগুলিকে একত্রিত করে এবং সর্বনিম্ন পৃষ্ঠ এলাকা ধারণ করার জন্য গোলাকার আকৃতি গঠন করে।
(গ) কৃত্রিম উপগ্রহের বেগ নির্ণয়ের জন্য আমরা মহাকর্ষীয় বলের সমীকরণ ব্যবহার করব: $$ F = \frac{G \cdot M \cdot m}{(R+h)^2} $$
  এখানে, \( F \) হল মহাকর্ষীয় বল, 
  \( G \) হল মহাকর্ষ ধ্রুবক, 
  \( M \) হল পৃথিবীর ভর, 
  \( m \) হল উপগ্রহের ভর, 
  এবং \( R+h \) হল উপগ্রহের পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে দূরত্ব।
উপগ্রহের বেগ \( v \) হল: $$ v = \sqrt{\frac{G \cdot M}{R+h}} $$
  এখানে, \( R = 6400 \) km
  
  এবং \( h = 650 \) km, 
  তাই \( R+h = 7050 \) km বা \( 7050000 \) m। 
  পৃথিবীর ভর \( M = 5.98 \times 10^{24} \) kg 
  এবং \( G = 6.67 \times 10^{-11} Nm²kg^{-2}\)।
এই মানগুলি ব্যবহার করে আমরা পেতে পারি: $$ v = \sqrt{\frac{6.67 \times 10^{-11} \cdot 5.98 \times 10^{24}}{7050000}} \approx 7.58 \times 10^3 \text{ m/s} $$
  (ঘ) উপগ্রহের পর্যায়কাল \( T \) হল:
  $$ T = 2\pi \sqrt{\frac{(R+h)^3}{G \cdot M}} $$
যদি উপগ্রহটি পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে \(700 \, km\) উপরে থাকত, তবে \( R+h \) হবে \(7100 \, km \) বা \(7100000 \, m \) ।
নতুন পর্যায়কাল হবে: $$ T_{new} = 2\pi \sqrt{\frac{7100000^3}{6.67 \times 10^{-11} \cdot 5.98 \times 10^{24}}} $$
এই মানগুলি ব্যবহার করে আমরা পেতে পারি যে নতুন পর্যায়কাল পূর্বের পর্যায়কালের চেয়ে বেশি হবে, কারণ \( (R+h)^3 \) এর মান বৃদ্ধি পাবে। তাই, হ্যাঁ, পর্যায়কালের পরিবর্তন ঘটবে।
উপসংহার: এই প্রবন্ধে পীড়নের ধারণা, পৃষ্ঠটান, এবং উপগ্রহের গতি ও পর্যায়কাল বিশ্লেষণ করা হয়েছে। পীড়নের প্রভাব আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যেমন- নির্মাণ ও যন্ত্রাংশের স্থায়িত্ব নির্ধারণে। এছাড়া, উপগ্রহের পর্যায়কাল সম্পর্কে ধারণা থেকে মহাকাশ গবেষণায় কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবহারের প্রযুক্তিগত প্রয়োগ সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা তৈরি হয়েছে।
 
       
       
      
