মুভিং কয়েল গ্যালভানোমিটার: গঠন, কাজের নীতি, সূত্র ও প্রয়োগ | Moving Coil Galvanometer Explained
গ্যালভানোমিটার হলো এক ধরনের সংবেদনশীল তড়িৎযন্ত্র যা খুব ক্ষুদ্র তড়িৎ প্রবাহের দিক ও মান নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়। এই প্রবন্ধে গ্যালভানোমিটারের গঠন, কাজের নীতি, সূত্র, গাণিতিক বিশ্লেষণ, সংবেদনশীলতা, ত্রুটি ও বাস্তব প্রয়োগ বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি পূর্ণাঙ্গ ও পাঠ্যবইধর্মী আলোচনা।
🧲 গ্যালভানোমিটার: গঠন, কার্যপ্রণালী, গাণিতিক বিশ্লেষণ ও প্রয়োগ
🌟 ভূমিকা
বিদ্যুতের প্রবাহ বা তড়িৎ প্রবাহ পরিমাপ ও শনাক্ত করা আধুনিক বিজ্ঞানের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ক্ষুদ্র তড়িৎ প্রবাহের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত যন্ত্র হলো গ্যালভানোমিটার। এটি একটি সংবেদনশীল ইলেক্ট্রোমেকানিক্যাল যন্ত্র, যা চৌম্বক ক্ষেত্রের প্রভাবে প্রবাহবাহী কুণ্ডলীর ঘূর্ণন ঘটিয়ে প্রবাহ শনাক্ত করে।
গ্যালভানোমিটার হলো অ্যামিটার ও ভোল্টমিটার-এর প্রাথমিক রূপ। সামান্য পরিবর্তনের মাধ্যমে এটি প্রবাহ বা বিভব পার্থক্য পরিমাপেও ব্যবহার করা যায়।
📜 ইতিহাস ও আবিষ্কার
গ্যালভানোমিটারের ইতিহাস শুরু হয় ১৮২০ সালে হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান অরস্টেড-এর বিখ্যাত পরীক্ষার মাধ্যমে, যেখানে তিনি প্রমাণ করেন যে বিদ্যুৎ প্রবাহ একটি চৌম্বক ক্ষেত্র সৃষ্টি করে। এরপর জোহান শোয়াইগার ১৮২৫ সালে প্রথম "গ্যালভানোস্কোপ" তৈরি করেন, যা আধুনিক গ্যালভানোমিটারের প্রাথমিক রূপ।
১৮৩০ সালে আন্দ্রে-মারি আম্পিয়ার ও কার্ল গাউস এর তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ দেন। পরবর্তীতে ডি’আর্সনভাল মুভিং কয়েল টাইপ গ্যালভানোমিটার উদ্ভাবন করেন।
⚙️ গঠন ও প্রধান উপাদান
১. স্থায়ী চুম্বক (Permanent Magnet)
এটি দুটি মেরু নিয়ে গঠিত— উত্তর (N) ও দক্ষিণ (S)। এরা একটি সমসত্ত্ব চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যার মধ্যে কুণ্ডলী স্থাপন করা হয়।
২. চলন্ত কুণ্ডলী (Moving Coil)
এটি সূক্ষ্ম তামার তার দিয়ে তৈরি। ভেতরে একটি নরম লোহা কোর থাকে, যা চৌম্বক ক্ষেত্রকে কেন্দ্রীভূত করে ও সংবেদনশীলতা বাড়ায়।
৩. আয়না (Mirror)
কুণ্ডলীর সাথে যুক্ত ছোট আয়না আলো প্রতিফলন পদ্ধতিতে সূক্ষ্ম ঘূর্ণন পরিমাপে ব্যবহৃত হয়।
৪. স্প্রিং (Spring)
স্প্রিং কুণ্ডলীকে ঝুলিয়ে রাখে ও টরশনাল বল প্রদান করে। এটি কুণ্ডলী ঘুরলে বিপরীতমুখী পুনরুদ্ধার টর্ক সৃষ্টি করে।
৫. সূচক ও স্কেল
সূচক (Pointer) কুণ্ডলীর ঘূর্ণনের সাথে স্কেলে চলে যায়। এভাবে প্রবাহের মান নির্ধারণ করা যায়।
৬. নরম লোহা কোর (Soft Iron Core)
এটি চৌম্বক ক্ষেত্রকে সমসত্ত্ব করে, ফলে যন্ত্রটির সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।
⚡ কার্যপ্রণালী
মূলনীতি: যখন একটি প্রবাহবাহী কুণ্ডলীকে চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে রাখা হয়, তখন তার উপর একটি টর্ক ক্রিয়া করে যা কুণ্ডলীর ঘূর্ণন ঘটায়।
যদি কুণ্ডলীতে প্রবাহ \( I \) যায়, তাহলে দুই বাহুতে বিপরীতমুখী বল \( F = BIL \) ক্রিয়া করে। ফলে কুণ্ডলীর উপর একটি ঘূর্ণন টর্ক উৎপন্ন হয়।
🧮 গাণিতিক বিশ্লেষণ
ধরা যাক:
- চৌম্বক ক্ষেত্রের তীব্রতা = \( B \)
- কুণ্ডলীর ক্ষেত্রফল = \( A \)
- কুণ্ডলীতে আবর্তনের সংখ্যা = \( n \)
- প্রবাহ = \( I \)
তাহলে উৎপন্ন টর্ক হবে:
\[ T = n B I A \]
কুণ্ডলী ঘুরলে স্প্রিংয়ে পুনরুদ্ধার টর্ক হয়:
\( T_r = k \theta \)
ভারসাম্যে পৌঁছালে:
\[ n B I A = k \theta \]
অতএব,
\[ \theta = \frac{nBA}{k} I \]
অর্থাৎ সূচকের বিচ্যুতি \( \theta \) সরাসরি প্রবাহ \( I \)-এর সমানুপাতিক।
📏 সংবেদনশীলতা (Sensitivity)
১️⃣ Current Sensitivity
প্রতি একক প্রবাহে সূচকের বিচ্যুতি: \[ S_i = \frac{\theta}{I} = \frac{nBA}{k} \]
২️⃣ Voltage Sensitivity
\[ S_v = \frac{\theta}{V} = \frac{nBA}{kR} \] যেখানে \( R \) হলো গ্যালভানোমিটারের মোট রোধ।
🧭 গ্যালভানোমিটার থেকে অ্যামিটার ও ভোল্টমিটার তৈরি
অ্যামিটার
গ্যালভানোমিটারের সাথে কম রোধবিশিষ্ট শান্ট যুক্ত করলে এটি অ্যামিটার হয়: \[ I = I_g \left( 1 + \frac{R_g}{R_s} \right) \]
ভোল্টমিটার
গ্যালভানোমিটারের সাথে উচ্চ রোধ ধারাবাহিকভাবে যুক্ত করলে এটি ভোল্টমিটার হয়: \[ V = I_g (R_g + R) \]
⚙️ সংবেদনশীলতা ও ত্রুটি
সংবেদনশীলতা নির্ভর করে:
- চৌম্বক ক্ষেত্রের তীব্রতা
- কুণ্ডলীর তারের দৈর্ঘ্য
- স্প্রিংয়ের ধ্রুবক
- তাপমাত্রা পরিবর্তন
সাধারণ ত্রুটি
- যান্ত্রিক ঘর্ষণ
- তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত রোধের পরিবর্তন
- চৌম্বক ক্ষেত্রের অমসৃণতা
🔬 বাস্তব প্রয়োগ
- ক্ষুদ্র তড়িৎ প্রবাহ শনাক্তে
- Wheatstone Bridge-এ ভারসাম্য নির্ণয়ে
- অ্যামিটার ও ভোল্টমিটার তৈরির মূল অংশ হিসেবে
- বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগারে বৈদ্যুতিক বর্তনীর বিশ্লেষণে
🧩 সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা
সুবিধা:
- ক্ষুদ্র প্রবাহ শনাক্তে সংবেদনশীল।
- গঠন সহজ ও নির্ভরযোগ্য।
- প্রবাহের সাথে ঘূর্ণন সরাসরি সমানুপাতিক।
সীমাবদ্ধতা:
- অধিক প্রবাহে কুণ্ডলী নষ্ট হতে পারে।
- তাপমাত্রা ও ঘর্ষণের প্রভাবে রিডিং পরিবর্তিত হয়।
- ক্যালিব্রেশন প্রয়োজন।
⚡️ গ্যালভানোমিটার: সৃজনশীল প্রশ্ন ও সমাধান 💡
📝 সৃজনশীল প্রশ্ন (Creative Question)
উদ্দীপক
একটি চল কুণ্ডলী গ্যালভানোমিটারের কুণ্ডলীর রোধ \(R_g = 100\,\Omega\) এবং পূর্ণ স্কেল বিচ্যুতির জন্য প্রয়োজনীয় প্রবাহ \(I_g = 5\,\text{mA}\)। যন্ত্রটির কুণ্ডলী \(\left(N=500\right)\) পাক সংখ্যাবিশিষ্ট এবং ক্ষেত্রফল \(A = 2\,\text{cm}^2\)। কুণ্ডলীটি \(B=0.5\,\text{T}\) চৌম্বক ক্ষেত্রে স্থাপিত এবং টর্শন ধ্রুবক \(k\) হলো \(2.5 \times 10^{-7}\,\text{N}\cdot\text{m}/\text{rad}\)।
প্রশ্নসমূহ
- ক) টর্ক (Torque) কী? (জ্ঞানমূলক)
- খ) গ্যালভানোমিটারকে কেন অ্যামিটার বা ভোল্টমিটার তৈরির ভিত্তি বলা হয়? ব্যাখ্যা করো। (অনুধাবনমূলক)
- গ) উদ্দীপকের গ্যালভানোমিটারটির তড়িৎ প্রবাহ সংবেদনশীলতা (\(S_I\)) নির্ণয় করো। (প্রয়োগমূলক)
- ঘ) উদ্দীপকের গ্যালভানোমিটারটিকে \(10\,\text{A}\) রেঞ্জের অ্যামিটার এবং \(100\,\text{V}\) রেঞ্জের ভোল্টমিটারে রূপান্তর করতে প্রয়োজনীয় রোধের মান ও তাদের সংযোগের যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করো। (উচ্চতর দক্ষতামূলক)
💡 সমাধান (Solution)
ক) টর্ক (Torque) কী?
টর্ক হলো এমন একটি বল, যা কোনো বস্তুকে তার অক্ষের চারপাশে ঘুরানোর প্রবণতা তৈরি করে। এটি বস্তুর ঘূর্ণন গতিতে পরিবর্তন ঘটায়। গাণিতিকভাবে, টর্ক \(\left(\vec{\tau}\right)\) হলো প্রযুক্ত বল \(\left(\vec{F}\right)\) এবং ঘূর্ণন অক্ষ থেকে বলের ক্রিয়া রেখার লম্ব দূরত্বের \(\left(\vec{r}\right)\) ভেক্টর গুণফল:
\[\vec{\tau} = \vec{r} \times \vec{F}\]টর্কের একক হলো নিউটন-মিটার (\(\text{N}\cdot\text{m}\))। গ্যালভানোমিটারের কুণ্ডলীতে তড়িৎ প্রবাহের কারণে সৃষ্ট টর্কের ফলেই কুণ্ডলী ঘুরে যায়।
খ) গ্যালভানোমিটারকে কেন অ্যামিটার বা ভোল্টমিটার তৈরির ভিত্তি বলা হয়? ব্যাখ্যা করো।
গ্যালভানোমিটারকে অ্যামিটার এবং ভোল্টমিটার তৈরির ভিত্তি বলা হয় কারণ এটিই তড়িৎ প্রবাহ বা বিভব পার্থক্য পরিমাপের মূল মেকানিজম সরবরাহ করে।
- তড়িৎ প্রবাহ শনাক্তকরণ ও পরিমাপের নীতি: গ্যালভানোমিটার তড়িৎ প্রবাহের চৌম্বকীয় প্রভাবের ওপর ভিত্তি করে কাজ করে। এর মূলনীতি হলো: কুণ্ডলীর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হলে তা চৌম্বক ক্ষেত্রে একটি বিচ্যুতিকারী টর্ক অনুভব করে, যা কুণ্ডলীকে ঘুরিয়ে দেয়। এই কৌণিক বিচ্যুতি (\(\theta\)) সরাসরি তড়িৎ প্রবাহের (\(I\)) সমানুপাতিক (\(I \propto \theta\))। এই সম্পর্কটিই যেকোনো আধুনিক বৈদ্যুতিক পরিমাপ যন্ত্রের মূলভিত্তি।
-
রূপান্তরের প্রক্রিয়া:
- একটি গ্যালভানোমিটারের সাথে সমান্তরালে একটি ক্ষুদ্র মানের শান্ট রোধ যুক্ত করে একে উচ্চ রেঞ্জের অ্যামিটার (তড়িৎ প্রবাহ পরিমাপক) তৈরি করা যায়।
- একটি গ্যালভানোমিটারের সাথে শ্রেণীতে একটি বৃহৎ মানের মাল্টিপ্লায়ার রোধ যুক্ত করে একে উচ্চ রেঞ্জের ভোল্টমিটার (বিভব পার্থক্য পরিমাপক) তৈরি করা যায়।
সংক্ষেপে, গ্যালভানোমিটারের অন্তর্নিহিত কার্যপদ্ধতিটিই তড়িৎ ও বিভব পরিমাপের একটি সুনির্দিষ্ট উপায় প্রদান করে, যা নির্দিষ্ট রোধের সংযোগের মাধ্যমে সহজেই অ্যামিটার বা ভোল্টমিটারে পরিবর্তিত হতে পারে। তাই এটি বৈদ্যুতিক পরিমাপ যন্ত্রের 'মাতৃযন্ত্র' বা ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
গ) উদ্দীপকের গ্যালভানোমিটারটির তড়িৎ প্রবাহ সংবেদনশীলতা (\(S_I\)) নির্ণয় করো।
তড়িৎ প্রবাহ সংবেদনশীলতা (\(S_I\)): একক তড়িৎ প্রবাহের জন্য সৃষ্ট বিচ্যুতিকে তড়িৎ প্রবাহ সংবেদনশীলতা বলে।
\[S_I = \frac{\theta}{I} = \frac{N A B}{k}\]এখানে,
- পাক সংখ্যা, \(N = 500\)
- কুণ্ডলীর ক্ষেত্রফল, \(A = 2\,\text{cm}^2 = 2 \times 10^{-4}\,\text{m}^2\)
- চৌম্বক ক্ষেত্র, \(B = 0.5\,\text{T}\)
- টর্শন ধ্রুবক, \(k = 2.5 \times 10^{-7}\,\text{N}\cdot\text{m}/\text{rad}\)
মান বসিয়ে পাই:
\[S_I = \frac{500 \times (2 \times 10^{-4}\,\text{m}^2) \times 0.5\,\text{T}}{2.5 \times 10^{-7}\,\text{N}\cdot\text{m}/\text{rad}}\] \[S_I = \frac{500 \times 10^{-4}\,\text{T}\cdot\text{m}^2}{2.5 \times 10^{-7}\,\text{N}\cdot\text{m}/\text{rad}}\] \[S_I = \frac{0.05}{2.5 \times 10^{-7}}\,\text{rad}/\text{A}\] \[S_I = 2 \times 10^5\,\text{rad}/\text{A}\]উত্তর: উদ্দীপকের গ্যালভানোমিটারটির তড়িৎ প্রবাহ সংবেদনশীলতা হলো \(\mathbf{2 \times 10^5\,\text{rad}/\text{A}}\)।
ঘ) উদ্দীপকের গ্যালভানোমিটারটিকে \(10\,\text{A}\) রেঞ্জের অ্যামিটার এবং \(100\,\text{V}\) রেঞ্জের ভোল্টমিটারে রূপান্তর করতে প্রয়োজনীয় রোধের মান ও তাদের সংযোগের যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করো।
উদ্দীপক থেকে প্রাপ্ত মান:
- গ্যালভানোমিটারের রোধ, \(R_g = 100\,\Omega\)
- পূর্ণ স্কেল বিচ্যুতি প্রবাহ, \(I_g = 5\,\text{mA} = 5 \times 10^{-3}\,\text{A}\)
১. অ্যামিটার তৈরি
- লক্ষ্য: \(I = 10\,\text{A}\) রেঞ্জের অ্যামিটার তৈরি।
- পদ্ধতি: গ্যালভানোমিটারের সাথে সমান্তরালে একটি ক্ষুদ্র মানের রোধ, শান্ট রোধ (\(R_s\)) যুক্ত করতে হবে।
- শান্ট রোধের মান (\(R_s\)): \[R_s = \frac{I_g R_g}{I - I_g}\] \[R_s = \frac{(5 \times 10^{-3}\,\text{A}) \times 100\,\Omega}{10\,\text{A} - (5 \times 10^{-3}\,\text{A})}\] \[R_s = \frac{0.5\,\text{V}}{9.995\,\text{A}} \approx 0.050025\,\Omega\]
- সংযোগের যৌক্তিকতা: অ্যামিটারকে বর্তনীর সাথে শ্রেণীতে যুক্ত করতে হয়। শান্ট রোধ ক্ষুদ্র হওয়ায়, মূল প্রবাহের প্রায় সম্পূর্ণ অংশই শান্টের মাধ্যমে যায়, যা গ্যালভানোমিটারের কুণ্ডলীকে সুরক্ষা দেয়। ক্ষুদ্র মানের \(R_s\) অ্যামিটারের মোট রোধকে প্রায় শূন্যের কাছাকাছি রাখে, ফলে এটি মূল বর্তনীর প্রবাহকে নগণ্যভাবে প্রভাবিত করে এবং সঠিক পাঠ দেয়।
২. ভোল্টমিটার তৈরি
- লক্ষ্য: \(V = 100\,\text{V}\) রেঞ্জের ভোল্টমিটার তৈরি।
- পদ্ধতি: গ্যালভানোমিটারের সাথে শ্রেণীতে একটি বৃহৎ মানের রোধ, মাল্টিপ্লায়ার রোধ (\(R_m\)) যুক্ত করতে হবে।
- মাল্টিপ্লায়ার রোধের মান (\(R_m\)): \[R_m = \frac{V}{I_g} - R_g\] \[R_m = \frac{100\,\text{V}}{5 \times 10^{-3}\,\text{A}} - 100\,\Omega\] \[R_m = 20000\,\Omega - 100\,\Omega = 19900\,\Omega\]
- সংযোগের যৌক্তিকতা: ভোল্টমিটারকে বর্তনীর দুই প্রান্তের সাথে সমান্তরালে যুক্ত করতে হয়। \(R_m\) অত্যন্ত বৃহৎ হওয়ায় এটি বেশিরভাগ বিভব বহন করে, ফলে গ্যালভানোমিটারের ওপরের বিভব পার্থক্য কম থাকে এবং এটি উচ্চ বিভবের কারণে নষ্ট হয় না। বৃহৎ রোধের কারণে ভোল্টমিটার বর্তনী থেকে নগণ্য প্রবাহ টানে, যা পরিমাপের নির্ভুলতা নিশ্চিত করে।
🧠 উপসংহার
গ্যালভানোমিটার তড়িৎ ও চৌম্বক প্রভাবের একটি বাস্তব উদাহরণ। এটি অ্যামিটার ও ভোল্টমিটার-এর ভিত্তি। আজকের ডিজিটাল যুগেও এর নীতি অ্যানালগ মিটার ও সেন্সর প্রযুক্তিতে প্রয়োগ করা হচ্ছে।
