ভর শক্তির সম্পর্কঃ \(E = mc^2\)
ভূমিকাঃ
ভর এবং শক্তির মধ্যে সম্পর্ককে সুনির্দিষ্টভাবে প্রকাশ করার জন্য আলবার্ট আইনস্টাইন ১৯০৫ সালে তার বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্বে \( E = mc² \) সমীকরণটি প্রস্তাব করেন। এই সমীকরণটি বিজ্ঞানের এক অসাধারণ আবিষ্কার, যা দেখায় যে ভর এবং শক্তি পরস্পর বিনিময়যোগ্য। ভরের মধ্যে শক্তি সঞ্চিত থাকে, এবং তা নির্দিষ্ট শর্তে মুক্ত করা যেতে পারে। এই নিবন্ধে, আমরা আইনস্টাইনের এই বিখ্যাত সমীকরণটির গাণিতিক প্রমাণ এবং এর মৌলিক ধারণা বিশ্লেষণ করব।
গাণিতিক প্রমাণঃ
১. বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের ভিত্তিঃ
বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব অনুযায়ী, কোন বস্তু যখন আলোর গতির কাছাকাছি গতিতে
চলে, তখন তার ভর বৃদ্ধি পায়।
আপেক্ষিক ভর \(m\)
এবং স্থির ভর \(m_{0}\) এর মধ্যে সম্পর্ক হল: $$m =
\frac{m_0}{\sqrt{1 - \frac{v^2}{c^2}}}$$ যেখানে, \(v\) হল বস্তুর গতি এবং
\(c\) হল আলোর গতি।
২. শক্তি এবং ভরের সম্পর্কঃ
আপেক্ষিক ভর \(m\) এর সাথে সম্পর্কিত মোট শক্তি \(E\) হলঃ $$E = mc^2$$ যদি বস্তুটি স্থির থাকে (অর্থাৎ, v = 0), তাহলে \(m = m_{0}\) এবং সমীকরণটি হয়ঃ $$E = m_0c^2$$
৩. গতিশক্তি বা কিনেটিক শক্তি এবং মোট শক্তিঃ
মোট শক্তি \(E\) কে স্থির শক্তি \(E_{0}\) এবং গতিশক্তি \(K\) এর সমষ্টি হিসেবে প্রকাশ করা যায়ঃ $$E = E_0 + K . . . . . (1)$$ যেখানে, $$E_{0} = m_{0}c^{2} . . . . . (2)$$ এবং $$K = \left( \frac{m_0c^2}{\sqrt{1 - \frac{v^2}{c^2}}} - m_0c^2 \right)$$
আমার ভরের আপেক্ষিকতা তত্ত্ব থেকে পাই $$ m= \frac{m_0}{\sqrt{1 - \frac{v^2}{c^2}}}$$ $$ \therefore K = mc^{2} - m_{0}c^{2} . . . .(3)$$
সমীকরণ (1) এর মধ্যে সমীকরণ (2) ও (3) এর মান বসিয়ে আমরা পাই, $$ E = m_{0}c^{2} + mc^{2} - m_{0}c^{2} $$ $$ \therefore E = mc^{2} $$
উপসংহারঃ এইভাবে, আমরা দেখতে পাই যে ভর এবং শক্তি একে অপরের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত।
$$ E = mc^2 $$
সমীকরণটি দেখায় যে ভরকে সম্পূর্ণভাবে শক্তিতে রূপান্তরিত করা সম্ভব এবং এর
বিপরীতও সত্য। এই সমীকরণটি আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের একটি মৌলিক ভিত্তি এবং এটি
পারমাণবিক শক্তি এবং অন্যান্য অনেক প্রযুক্তির ভিত্তি।
আপনার যদি আরও কোনো প্রশ্ন থাকে বা অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চান,
আমাকে জানাতে পারেন!